এটা সুসংবাদ না দুঃসংবাদ; মিজানুর রহমান


স্বপ্নসারথি ডেস্কঃ প্রকাশের সময় : মার্চ ৩০, ২০২৩, ১২:০৪ AM / ২০৭
এটা সুসংবাদ না দুঃসংবাদ; মিজানুর রহমান
দেশে বৃদ্ধের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা সুসংবাদ না দুঃসংবাদ। গালিভার তার ভ্রমণ-বৃত্তান্তের এক পর্বে অমর মানুষের দেখা পায়।দেখা করতে যাবার পূর্বে তার মনে হয়, না জানি কি অকল্পনীয় সুখী মানুষের সে দেখবে – যারা যুগ যুগ ধরে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও রস সঞ্চয় করেছে, তারা এখন অনাগত কালের প্রাচুর্য দেখতে উৎসুক জীবন যাপনে মগ্ন। অমরত্ব না জানি তাদের হৃদয়ে অনন্ত আশার আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে রেখেছে! কিন্তু সে দেখল, অসম্ভব হতাশ, মলিন, বিমর্ষ ও বার্ধক্যপীড়িত মানুষ অশেষ তিক্ততা নিয়ে অসীম অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে। গালিভার সবিস্ময়ে অনুধাবন করলো – এ অমরত্বের অর্থ তো মৃত্যুর অক্ষমতা!
না, অনন্ত আয়ুর অর্থ অন্তহীন অপরূপ যৌবনসহ অনন্ত সুস্বাস্থ্য নয়। জীবনের মুহূর্তগুলো প্রলম্বিত হলে অনভিপ্রেত অসুখের আবির্ভাবে অসহ্য ও অস্থির দিনগুলোই বৃদ্ধি পাবে। বার্ধক্য পীড়িত বিষাদ ও বিমর্ষ অপরাহ্নগুলো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছায়া বিস্তার করবে মাত্র। যৌবনের ফুর্তিময় অমূল্য সময়ের বিন্দুমাত্র বৃদ্ধি ঘটবে না।
উপসংহারটি সুসংবাদ না দুঃসংবাদ সে ধন্দটি কিন্তু থেকেই যায়। অর্জিত স্বাধীনতা ৫২ বছর পার করলো। কতদিন ধরে আর কত অবক্ষয় দেখবে দেশের জরা জর্জরিত বৃদ্ধরা?
তারা কি এমন সান্ত্বনা নিয়ে প্রতীক্ষা করবে :
‘একটু পরেই আসবে আঁধার /অন্তহীন আলোর জ্যোতি, /বিষন্নতার ক্ষণিক মেঘ /সহ্য করলে কি আর ক্ষতি!’
লেখক- বীর মুক্তিযোদ্ধা, কলাম লেখক, সমাজ, রাজনীতি ও মনস্তত্ব বিশ্লেষক, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।