বয়স হবে বারো-তেরো বছর।
রাতের খাবার টেবিলে বসে বসে মনে হলো,
আগামীকাল ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস।
বাবা মা খাবার শেষে স্বাধীনতারই গল্প করছে।
আমার মনে প্রশ্ন এলো, স্বাধীনতা মানে কি?
স্কুলে স্কুলে খেলাধুলা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
স্বাধীনতা মানে কি? আনন্দ আর আনন্দ।
বাবাকে বললাম, বাবা স্বাধীনতা মানে কি?
বাবা বললেন, পাগলরে,
স্বাধীনতার অনেক বড় গল্প আছে।
কি সে গল্প বাবা? আমি শুনবো।
শোনো বাবা- বাবা স্বাধীনতা মানে যুদ্ধ যুদ্ধ দিন।
যেখানে সেখানে পাক হানাদারদের আক্রমণ।
দেশের শত্রু রাজাকারদের উন্মাদ হাসি।
এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ,
আর নিরস্ত্র বাঙালির লাশের মিছিল।
নারীদের সম্ভ্রমহানি, স্বজনের আহাজারি,
বাংলার আকাশ বাতাসকে ভারি করে তোলা।
ত্রিশ লক্ষ মানুষের শহীদ হওয়া,
দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জত হারানো,
অগণিত মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করা।
তবুও সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের হাল না ছাড়া,
অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হয়েই,
ঘরে ফেরার পণ করা।
মা তার সন্তানকে ফেরারি করে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করা,
চোখের অশ্রু বানে সিক্ত করে,
নাড়িছেঁড়া কলিজার ধনকে,
দেশের তরে বিলিয়ে দেওয়া।
এমনই হাজারো ত্যাগের বিনিময়ে যুদ্ধে জয়ী হওয়া,
বাংলার আকাশে নতুন সূর্যের উদয়,
আর আমাদের স্বাধীনতা পাওয়া।
তখন হতেই স্বাধীনতা আমাদের গর্ব,
অহংকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তখন হতেই হৃদয়ে ধারণ করি,
বীর বাঙালীর সংগ্রামী চেতনার ইতিহাস।
রক্তের দামে কেনা সে স্বাধীনতা সারা বিশ্বের বিস্ময় ।
২৬ শে মার্চ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয় স্বাধীনতার।
বাবা দিনটি তাই আমাদের স্বাধীনতা দিবস।
আপনার মতামত লিখুন :